স্বাধীনতার ৪৪ বছরে শুধু ভোটের রাজনীতিতে নয়, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকেও এখনো শক্তিশালী করা যায়নি বলে সুসংহত করা সম্ভব হচ্ছে না স্থিতিশীল অগ্রযাত্রা। আর এর সুযোগে জঙ্গিবাদের দ্রুত বিকাশ ঘটছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
বুধবার সময় টিভির এক প্রতিবেদনে ওঠে আসে ৪৪ বছরে বাংলাদেশের রাজনীতির উত্থান-পতন, সঙ্কট ও ক্রান্তিকাল।
প্রতিবেদনে বলা হয়, স্বপ্ন ছিলো একটি স্বাধীন দেশ, পতাকা আর মাতৃভূমির। সে স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে রাজনীতির বহু বাঁক বদল হয়েছে, ঘটেছে উত্থান-পতন। সিংহাসনে এসেছে নতুন নতুন মুখ।
তবে এখনও সুসংহত গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম চলছে। এখনও এমন একটি রাষ্ট্র আর সমাজ ব্যবস্থার প্রত্যাশা, যেখানে মানুষের অধিকার কিংবা সুযোগ নিয়ে কোন বৈষম্য থাকবে না।
নতুন প্রজন্মের কয়েকজন জানান, রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে ভবিষ্যৎকে খুব পরিষ্কারভাবে দেখছেন না তারা। এছাড়া, দেশের স্বার্থে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেয়ার মতো নেতার অভাব রয়েছে বলেও জানান তারা।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, জনগণের মুক্তির আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করার মতো রাজনৈতিক শক্তির দুর্বলতায় বিকাশ হচ্ছে শক্তিশালী জঙ্গিবাদের।
এ ব্যাপারে অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘আমরা একটি আশঙ্কার মধ্যে আছি। একদিকে, সংসদীয় গণতন্ত্র কাজ করছে না, অন্যদিকে জঙ্গিবাদের বিকাশ ঘটছে। এছাড়া জনগণের পক্ষের যে রাজনীতি তা কিন্তু এখনও বিকশিত হয়নি। সব মিলিয়ে আমরা বলতে পারবো না যে, রাজনৈতিকভাবে অগ্রসর হয়েছি।’
এদিকে অধ্যাপক ড. রওনক জাহান বলেন, ‘আমরা একটি সুষ্ঠু গণতন্ত্রের, সহনশীল ও ধর্মনিরপেক্ষ দেশ পাবো বলে আকাঙ্ক্ষা ছিলো। সুষ্ঠু রাজনীতির একটি মজবুত কাঠামো এখনও আমরা দাঁড় করাতে পারিনি। বাক-স্বাধীনতা এখনও নিশ্চিত হয়নি।’
সর্বস্তরে জনগণের শাসন, মতপ্রকাশের সুযোগ এবং রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে শিষ্টাচার প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি সংসদীয় গণতন্ত্রকে অগ্রাধিকার দেয়া গেলেই সুদিন আসবে।
রাজনৈতিক নানা সঙ্কটের মধ্যেও বিশ্লেষকরা বলছেন, এখনও দেশের তরুণদের মধ্যে, সাধারণ মানুষের মধ্যে আকাঙ্ক্ষা আছে নতুন কিছু করার। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় প্রবহমান এই মানুষদের সংগঠিত করা গেলেই সম্ভব হবে সুপরিবর্তন।