জাতিসংঘে বাংলাদেশের সদ্য বিদায়ী স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সম্মানে এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করে ব্রিটিশ-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (বিবিসিসিআই)।
মঙ্গলবার (১৭ নভেম্বর) ব্রিটিশ-বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধিত্বকারী শীর্ষ এই সংগঠনটির উদ্যোগে হাউজ অব লর্ডসের একটি কমিটি রুমে ওই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
মিট ড এ কে আব্দুল মোমেন শিরোনামে অনুষ্ঠিত ওই মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন বিবিসিসিআইয়ের প্রেসিডেন্ট মাতাব চৌধুরী। সভা সঞ্চালনা করেন হাইজ অব লর্ডসে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত একমাত্র সদস্য ব্যারোনেস পলা মঞ্জিলা উদ্দিন।
আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ব্রিটিশ বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের ফাইন্যান্স ডাইরেক্টর সাইদুর রহমান রেনু, লন্ডন রিজিওনের প্রেসিডেন্ট বশির আহমদ, সাবেক প্রেসিডেন্ট শাহগির বখত ফারুক, প্রেস এন্ড পাবলিক রিলেশন্স ডাইরেক্টর শফিকুল ইসলাম, কমিউনিটি এফেয়ার্স ডাইরেক্টর এম এ কাইয়ুম, ডাইরেক্টর আতাউর রহমান কুটি, ডাইরেক্টর সোরকুমখালেদ আহমদ, নর্থ ইস্ট রিজিওনের প্রেসিডেন্ট মাতাব মিয়া, মেম্বার আবুল হায়াত নুরুজ্জামান, ডা. আলাউদ্দিন ও মিসেস সেলিনা মোমেন প্রমুখ।
বিবিসিসিআই-এর প্রেসিডেন্ট মাতাব চৌধুরী বলেন, জাতিসংঘে স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবে ড এ কে আব্দুল মোমেন বাংলাদেশের পক্ষে যে বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখেছেন, তা নি:সন্দেহে প্রসংশার দাবিদার। তিনি বলেন, আব্দুল মোমেন সেই দায়িত্ব শেষে প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার অনুরোধে বাংলাদেশে ফিরে যাচ্ছেন।
মাতাব চৌধুরী মনে করেন, ড মোমেন বাংলাদেশে যাওয়ার পর নিশ্চই নতুন করে বড় কোনো দায়িত্ব পাবেন। তিনি বলেন, আব্দুল মোমেনের মত লোকদের এত তাড়াতাড়ি অবসরে চলে গেলে চলবে না। তার কাছ থেকে দেশ ও জাতির এখনো অনেক কিছু পাওয়ার আছে।
বিবিসিসিআই-এর প্রেসিডেন্ট আশা প্রকাশ করে বলেন, বাংলাদেশে ফিরে নতুন দায়িত্ব নেয়ার পর আব্দুল মোমেন বাংলাদেশে ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নয়ন ও নতুন নতুন বিনিয়োগ আকর্ষণে পরিবেশ তৈরিসহ দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবেন। সভায় অন্যান্য বক্তারাও আশা করেন, দেশে ফিরে আব্দুল মোমেন বাংলাদেশের জন্য আরো ভাল কিছু উপহার দিতে পারবেন। সভায় বক্তাদের প্রসংশার জবাবে ড এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবে তিনি যে দায়িত্ব পালন করেছেন, তার বেশির ভাগ কৃতিত্বই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এবং বাংলাদেশের মানুষের। কেননা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতা নেয়ার পর থেকেই সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ নির্মূলে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন। দারিদ্র বিমোচন ও জাতিসংঘের সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে দৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন।
বাংলাদেশকে ২০২১ সালের মধ্যে একটি মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত দেশে রুপান্তরিত করার প্রতিশ্রুতি ঘোষণা করেছেন। আবার জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনে বাংলাদেশের অংশগ্রহণসহ বেশ কিছু বিষয়ে বলা মাত্র শেখ হাসিনা পদক্ষেপ নিয়েছেন। ফলে বাংলাদেশের এসব ইতিবাচক দিকগুলো জাতিসংঘের মাধ্যমে বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে তাঁর জন্য বেশ সহজ হয়েছে।
ড. মোমেন বলেন, বাংলাদেশের মানুষ অত্যন্ত পরিশ্রমী। তারা শিক্ষা অর্জন ও দারিদ্রকে মোকাবেলা করে নিজেদের জীবনমান উন্নয়নে কঠিন সংগ্রাম করছে। কৃষি উতপাদন কয়েকগুন বাড়িয়ে বাংলাদেশকে খাদ্যে সয়ংসম্পূর্ণ দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। ফলে মূল কাজটি করেছেন বাংলাদেশের মানুষ এবং প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, মোমেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অত্যন্ত যৌক্তিক এবং দ্রুত সিদ্ধান্ত দিতে পারার মত একজন বলিষ্ঠ মানুষ হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেন, তার মন্ত্রীসভায় যাদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে তেমন কোনো দুর্নীতির অভিযোগ নেই। ফলে এই বিষয়টিও তার দায়িত্ব পালনে সহায়ক হয়েছে। সন্ত্রাসবাদ এবং জলবায়ু পরিবর্তনকে বর্তমান বিশ্বের একটি সর্বজনিন সমস্যা হিসেবে উল্লেখ করেন ড. মোমেন। তিনি বলেন, কোনো দেশের পক্ষে এককভাবে এই দুটি সমস্যা মোকাবেলা করা সম্ভব নয়। এজন্য প্রত্যোকটি দেশকে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের ভিত্তিতে ঐকবদ্ধ হতে হবে।