কী করছেন? ‘আর বইলেন না ভাই। ভিসা অফিসে সারা দিন। দেশের বাইরে ঘুরতে যাব পূজার ছুটিতে,’ জ্যোতির গলায় বিরক্তির আভাস। ‘ওদের সফটওয়্যারে কী একটা সমস্যা হওয়ায় এত সময় লাগছে। শেষ করেই আপনাকে ফোন দিচ্ছি।’
ভিসা হাতে যতক্ষণে জ্যোতি পৌঁছালেন ততক্ষণে নিভে গেছে রবির জ্যোতি। সন্ধ্যা নামি নামি করছে। জিজ্ঞেস করি তাঁর নতুন কাজ নিয়ে। মোরশেদুল ইসলামের ছবি ‘অনিল বাগচীর একদিন’-এর কাজ শেষ করলেন সম্প্রতি। কেমন ছিল অভিজ্ঞতা? ‘একদিকে হুমায়ূন আহমেদের গল্প অন্যদিকে মোরশেদুল ইসলামের পরিচালনা-আমার জন্য খুবই আনন্দের একটা ঘটনা। অনিলের বোন অতশী হয়েছি। মোরশেদ ভাইয়ের সঙ্গে আগেও কাজ করেছি, তখন ওনাকে খুব ভয় পেতাম। এখন সেই ভয়টা কেটে গেছে। মনে হচ্ছে একটু বড় এবং পরিণত হয়েছি।’ ছবিটির শুটিং করতে গিয়ে বেশ কিছু মজার ঘটনা ঘটেছে। একটা ঘটনা শেয়ার করলেন জ্যোতি, ‘৭১ সালের গল্প হওয়ায় ওই সময়কার একটা বাস দেখাতে হয়েছে। কিন্তু কেন জানি বাসটা বারবার পানিতে পড়ে যেত।’ সেটা কি রকম? ‘ধরেন, রাস্তার পাশে বাসটি পার্ক করা, হুট করে অন্য একটা বাস এসে ধাক্কা মারল। আর আমাদের বাসটি সোজা রাস্তার পাশের বিলে। একাধিকবার এমন হয়েছে। বাস পানিতে পড়ে যাওয়ায় একবার শুটিং বন্ধ ছিল তিন দিন।’
এবারের ঈদে উপস্থাপনায় দেখা গেছে জ্যোতিকে। ‘৭১ টিভিতে একটা অনুষ্ঠান করেছি। সেটা ঠিক উপস্থাপনা নয়। কবরী আপার [কবরী সারোয়ার] সঙ্গে আড্ডা বলতে পারেন। তিনি আমার পছন্দের মানুষ। সে কারণেই কাজটি করা।’
উপস্থাপনায় নিয়মিত হবেন? ‘সাধারণত যেভাবে উপস্থাপনা হয় সে রকম কিছু করার ইচ্ছে নেই। দুজন বসে আছি, গোছানো কিছু প্রশ্ন করছি, এমনটা চাই না। দর্শকের সঙ্গে ইন্টারঅ্যাকটিভ কিছু হলে করতে পারি।’ বললেন জ্যোতি।
বিবিসির ‘উজান গাঙের নাইয়া’ করছেন। ‘হ্যাঁ। এবার এই ধারাবাহিকের তৃতীয় সিজন চলছে। প্রতিবছর আলাদা আলাদা গল্প হলেও নামটা একই থাকছে। এই একটা জায়গায় কাজ করে আরাম পাই। যে সন্মান পাই এবং যে সিস্টেমের মধ্য দিয়ে যেতে হয় সেটা খুবই ভালো। কাজ করার সময় প্রতি মুহূর্তে মনে হয়-হ্যাঁ, আমি একজন শিল্পী। আগামী তিন মাস আমি বিবিসির। গত দুই সিজনের মতো এবারও ভালো কাজ হবে বলে আশা করছি।’
এর বাইরে কী ভাবছেন? ‘সিনেমা নিয়েই থাকতে চাই। এফডিসির মেইনস্ট্রিম সিনেমায় কাজ করার কথা চলছে। ব্যাটে-বলে মিললেই করে ফেলব।’
মাঝখানে আপনার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে বেশ কথা শোনা যাচ্ছিল একজন নাট্যপরিচালককে জড়িয়ে। কতটুকু সত্যি সেই খবর? ‘এই অধ্যায়টা মনে করতে চাই না। আমার সঙ্গে যা হওয়ার হয়েছে, সব ভুলে সামনে এগিয়ে যেতে চাই। আমাকে যে কষ্ট দিয়েছে সেও ভালো থাকুক। এখন শুধুই কাজে ডুবে থাকতে চাই।’
‘অনিল বাগচীর একদিন’ কবে মুক্তি পাবে? ‘১৩ নভেম্বর হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন, শুনেছি সেদিনই মুক্তি পাবে।’ চলচ্চিত্রটি দেখেছেন? ‘পুরো টিম মিলে টেকনিক্যাল শো দেখেছি। খুব ভালো লেগেছে। মোরশেদ ভাইও খুব আশাবাদী দেখলাম। মোরশেদ ভাই আমার অভিনয়ের প্রশংসা করেছেন। এটাই বড় পাওয়া।’