ফের অশান্ত হয়ে উঠেছে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা। পূর্ব জেরুজালেম আর পশ্চিম তীরে ইহুদি-ফিলিস্তিনিদের মধ্যকার তিন সপ্তাহের অব্যাহত সহিংসতার মধ্যে এত দিন গাজা শান্ত থাকলেও গতকাল শুক্রবার গাজার ইসরায়েল সীমান্তে ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে তিন ফিলিস্তিনি তরুণ নিহত হয়েছে।
গাজার নিয়ন্ত্রণকারী সংগঠন হামাসের গাজা শাখার প্রধান ইসমাইল হানিয়া গাজা শহরের এক মসজিদে গতকাল জুমার খুতবার সময় ‘ইন্তিফাদা’ তথা বিপ্লবের আহ্বান জানালে সীমান্ত উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। খুতবায় তিনি বলেন, ‘আমরা ইন্তিফাদা শক্তিশালী করার আহ্বান জানাচ্ছি। স্বাধীনতা অর্জনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য এটাই একমাত্র পথ।’ ইন্তিফাদায় গাজার ভূমিকা উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, ‘জেরুজালেমে ইন্তিফাদা সৃষ্টিতে গাজা পূর্ণ ভূমিকা রাখবে এবং মুখোমুখি যুদ্ধের চেয়েও আরো বেশি প্রস্তুতি গাজার আছে।’ ১৯৮৭ ও ২০০০ সালে দুই দফা ইন্তিফাদার সাক্ষী গাজায় আবারও গণজাগরণ হতে পারে বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা।
ইসমাইল হানিয়া গণজাগরণের ডাক দেওয়ার পর গাজা-ইসরায়েল সীমান্তে এর প্রভাব পড়ে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র জানান, ফিলিস্তিনি বিক্ষোভকারীরা সৈন্যদের দিকে পাথর ছুড়তে থাকে। একপর্যায়ে তারা সৈন্যদের দিকে আগুন দেওয়া টায়ার গড়িয়ে দিতে শুরু করে। এর পরই গুলি চালায় ইসরায়েলি সেনারা। এতে ২০ বছর বয়সী তিনজন ফিলিস্তিনি তরুণের মৃত্যু হয়। ১৭ বছর বয়সী আরেকজন ফিলিস্তিনি আহত হয়।
এদিকে ইসরায়েলের দিমোনা শহরে একজন ইহুদির ছুরিকাঘাতে চারজন আহত হয়েছে। স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে, আহতদের মধ্যে আরব বংশোদ্ভূত দুজন ইসরায়েলি নাগরিক ও দুজন ফিলিস্তিনি রয়েছে। মুসলমানদের ওপর ইহুদি আক্রমণের কঠোর নিন্দা জানিয়েছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। গতকাল এক বিবৃতিতে তিনি এ ঘটনার নিন্দা জানান এবং বলেন, ‘এই সহিংসতায় জড়িত আইনভঙ্গকারী ব্যক্তি যে-ই হোক না কেন তাকে কর্তৃপক্ষ খুঁজে বের করবে। ঘটনাটা কোথায় ঘটেছে, সেটা কোনো ব্যাপার নয়।’ এ ছাড়া জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদে জুমার নামাজে ৫০ বছরের কম বয়সী ফিলিস্তিনিদের প্রবেশে আবারও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন নেতানিয়াহু। গতকাল শুক্রবার তিনি এ আদেশ দেন। এর আগে গত বৃহস্পতিবার তিনি ইসরায়েলি পার্লামেন্ট সদস্যদের আল-আকসায় প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। একই দিন ওল্ড সিটিতে প্রবেশের পথে বসানো হয় মেটাল ডিটেক্টর। সূত্র : এএফপি।